তুমি আছো বলে
-রাজীব লোচন বালা
ধর্ম আছে – অধর্ম আছে, সত্যি আছে – অসত্যিও আছে,
জীবনের মধ্য দিয়ে কাহানী আছে গরিমার।
বিদ্যা আছে – শক্তি আছে, জ্ঞান আছে- ভক্তি আছে, কত- কাহিনী সবাধার__
জয় আছে-পরাজয় আছে, সত্যের মধ্য দিয়ে কভু বিরহজ্বালারও আঁধার আসে।
আমৃত্যু, মৃত্যুর খোঁজে চলে কত জীবন এই ভূমন্ডলে,
‘তুমি’ আছো বলে হে মৃত্যু, জীবনের মূল্য এত বেশী।
তুমি গরিমা, তুমিই মহাত্মা, এই জীবনের পরম পরাকাষ্ঠা _
তোমা সনে জড়িত আছে কত, বীর শহীদদের জীবন গাঁথা।
“তুমি” আছো বলে জীবনের সর্বৈব গুরুত্ব রয়ে যায়;
ধর্ম মার্গকে প্রতিষ্ঠা করিতে “শাহাদত” কত তরুণ প্রাণ- প্রাণা।
কে বলে যে মৃত্যু কভু কাঙ্খিত নয়,’তুমি’ আছো বলে হে,
ভারতমাতার বীর সন্তানদের জীবন সংগ্রাম অমর হয়ে রয়।
ভুলে যেও না সেই বীর বিপ্লবীদের, যারা হাস্যমুখর বদনে সদা জড়িয়ে ধরছে মৃত্যুরে প্রিয় আপনজন ভেবে,
ক্ষুদিরাম, ভগৎ, আসফাকউল্লা, আজাদ রাজগুরুর মতন-
কতশত অনাম্নী বীর বিপ্লবীরা__
মোহের বাঁধন ছিঁড়ে, স্বাধীন করতে মায়ের হাতের কড়া,- ফিরিঙ্গী শৃঙ্খল,
দিয়েছে প্রাণ দেখো, হাস্য-গানের মধ্য দিয়ে শির সুউচ্চ রেখে- সদা।
‘তুমি’ আছো বলে, জীবনের শ্রেয়টুকু প্রকৃতই মানুষ পায়,
জানি আপন বিয়োগ কভু ভালো লাগে না !
মৃত্যুরে তাই ভয় লাগে !তবে কেন এত শব্দ- কবিতা- গান ?
কত প্রাণ যায় এই অশ্বমন্ডলের ওপরে, তবে তাহলে মানতেই- হয় যে,
মানুষের মাঝে একাত্মতার অভাব আছে সুনিশ্চয়।
শ্রীকৃষ্ণ বলে গেছেন, এসকল মায়া জেনে মনে রেখো বন্ধু,
মৃত্যুই পরম সত্য এই ব্রহ্মান্ডে, তা সদা সূর্যের মতন তেজোদৃপ্ত অবিচল।
তুমি মৃত্যু করতে পারো নাই সবারে জয়, হয়েছে কত মৃত্যুঞ্জয়,
তারা কর্মের মধ্য দিয়ে মাটি – মাংসে গড়া মানুষ সেজে রয়েছে মানব হৃদ মন্দিরে।
অমর হয়ে রয়ে যাওয়া এই কায়ানাতে অভিশাপেরই সমতুল
“মহাভারতে”র অশ্বথামা পেয়ে যাচ্ছে তার মাশুল।
আমৃত্যু, তাই মৃত্যুর তপস্যা, এই জীবনে মোর জপমালার আধার,
মৃত্যুই আর্শীবাদ যদি পারি সৃষ্টিমালা গাঁথতে এ জগত -সংসার।
মৃত্যু যদি না রইতো, এই জীবনে তবে কলুষতার হাড়ি ভরতো,
মানব জন্ম সদা উদ্দেশ্য পূরণের জন্য করে সমাপন নিজ নিষ্কাম কর্তব্য __
চলো শেষে প্রসন্ন মন-চিত্তে করে গমন”অমৃতধামে” শেষবারে,
জীবনের শেষ গতি “তাকে ভালোবেসে” চির শান্তির দেশে।
‘তোমার’ বিচারে, ধনী-নির্ধন, জাত-পাতের নাই কোনো স্বীকার,
‘মৃত্যু’ তুমি আছো বলে,জীবনের শেষ মৃত্যুর অলঙ্কারে মানুষ_
চিরস্মরণীয় হয়ে রয় মানুষের চিন্তন-মননের ভেতর, সর্বভূতে।
সদা যেন থাকি ‘তুমি’ মৃত্যুকে বরণ করতে-বন্দনা দিতে,
দুই বাহু প্রসারিয়া তোমারে আলিঙ্গন করিতে এই
রাজীব দাঁড়িয়ে টলমল রক্তিম জীবন নদীর ধারে।
অসাধারণ কবিতা। মৃত্যুরে অভ্যর্থনা, অনবদ্য লেখনী কবিপ্রিয়।
খুব সুন্দর লেখনী